দারুন সুখবর রয়েছে সকল রেল যাত্রীদের জন্য। নিশ্চই সেই সুখবর জানার জন্য আকুলি বিকুলি করছে মন? আসুন তবে বলি, সামনেই লোকসভা ভোট। আর তারই মধ্যে কেন্দ্র সরকার এক ধাক্কায় রেলের ভাড়া কমালো ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ভাড়া কমলো ৩ গুণ। করোনা মহামারীর আগে যে দামে যাত্রীরা টিকিট কাটতেন, এবার থেকে সেই দামেই টিকিট কাটতে পারবেন সকলে। যদিও কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল রেলের ভাড়া কমানো হবে, তবে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় রেল।
আসলে করোনা মহামারীর সময় সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এরফলে দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেস এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেন ধাপে ধাপে চালানো শুরু হয়। সেইসময় ফারাক দেখা দেয় যাত্রীভাড়ায়। আগে যেখানে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ন্যূনতম ভাড়া ছিল ১০ টাকা, ওইসময় তা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৩০ টাকা। এরপর নিত্য যাত্রীদের বেশ খানিক বিপাকে পড়তে হয়েছিল। পকেট থেকে খসছিল বেশি টাকা। রেল কর্তাদের দাবি, করোনার সময় প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিতে অস্বাভাবিকভাবে ভিড় হচ্ছিল। সেই ভিড় কমাতেই ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেন তারা।
এহেন পদক্ষেপের জেরে যাত্রীদের ক্ষোভ বাড়ছিল। আর বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরেও সেই বর্ধিত ভাড়া কমার নাম নেই বলে যাত্রীরা অভিযোগ জানান। সেই কারণেই শেষমেশ রেল মন্ত্রক পুরনো অবস্থানে ফেরে এবং সিদ্ধান্ত নেয় ভাড়া কমানোর, যা চলতি বছরের ২৭শে ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর করা হয়েছে। বর্তমানে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের নাম বদলে এক্সপ্রেস স্পেশাল বা মেমু/ডিইএমইউ এক্সপ্রেস নাম দেওয়া হয়েছে।এই ধরনের ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণির জেনারেল কামরার ভাড়া একলাফে কমানোর ফলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে রেল যাত্রীরা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চলতি বছরের ২৬শে ফেব্রুয়ারি একাধিক রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন, যার মধ্যে রয়েছে সারা দেশে ৫৫০টির বেশি স্টেশন পুনর্নির্মাণ, যা ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পের আওতায় এই কাজ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। কেন্দ্র চলতি অর্থবর্ষে ভারতীয় রেলের উন্নতির লক্ষ্যে ৪১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মধ্যে স্টেশন সংস্কার ছাড়াও রয়েছে ১৫০০টি রোড ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস নির্মাণ। পূর্ব রেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে যে, এই প্রকল্পের আওতায় বাংলায় মোট ৫৪টি স্টেশনে সংস্কারের কাজ চলবে।
বর্তমানে ভাড়া হ্রাসের বিষয়টি নিয়ে সেন্ট্রাল রেলের যাত্রী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শিবনাথ বিয়ানি বলেছেন, ‘মূল্যবৃদ্ধির বাজারে রেল টিকিটের দাম কমায় স্বস্তি পেলেন গরীব, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত যাত্রীরা, যা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।’ রেলের বর্তমান সিদ্ধান্তে নিত্য রেলযাত্রীরা স্বভাবতই খুশী।